তালায় প্রত্যন্ত অঞ্চল প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত, খাদ্য ও পানীয় জলের ব্যাপক সংকট!
সেলিম হায়দার, তালা (সাতক্ষীরা): সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল টানা চারদিনের প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে। শত শত মৎস্য ঘের, ফসলী জমি ও বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে রাস্তার উপর খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে গবাদি পশু নিয়ে নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উপজেলার উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম তলিয়ে গেছে। এই সব গ্রামের মাছের ঘের, কৃষি ফসল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামের মধ্যে পানি উঠায় সকল নলকুপ তলিয়ে যাওয়ায় পানীয় জলের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। এসকল গ্রামের মানুষ গবাদিপশু নিয়ে উচুঁ রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়েছে। রান্নার ব্যবন্থা না থাকায় প্রায় অভূক্ত অবস্থায় দিন পার করছেন তারা। এতে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নারী ও শিশুরা। গত ২দিন ধরে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় এনজিওদের সহযোগীতায় এলাকাবাসি ও জনপ্রতিনধিরা সেচ্ছাশ্রমে এসব এলাকার পানি সরানোর কাজ করছেন।
সোমবার সকাল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল আমিন, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ওবায়দুল হক উপজেলা নগরঘাটা, তালা সদর সহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে পানি সরানোর উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছেন। নিজে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন খাস খাল দখলমুক্ত করে পানি নামানোর ব্যবস্থা করছেন।
জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু জানান, তার ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এলাকার অধিকাংশ ঘের ও ফসলি জমি ভেসে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ মন্দির এমনকি মানুষের বাড়িঘরে পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা পানি কমিটির সাধারন সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান জানান, উপজেলার টিআরএম কার্যকর থাকলে এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। অপরিকল্পিত নদী খনন, সংযোগ খাল উন্মুক্ত না থাকা এই উপজেলায় জলাবদ্ধতার মূল কারণ। এখনই যদি পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে তালা সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সকল উপজেলা পানির নীচে তলিয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, উপজেলা ব্যাপী কৃষি ফসলের ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করছি। এখনো চুড়ন্ত তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্নিগ্ধা খা বাবলি জানান, উপজেলায় ৫২০টি মাছের ঘের সম্পূর্ণরুপে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে ৮২৭.৪৫ মেঃটঃ মাছ ভেসে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ওবায়দুল হক জানান, এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য সকল ইউপি ও সরকারী দপ্তরে তথ্য চাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কাছে আশু সমাধানের জন্য আর্থিক চাহিদা দেয়া হয়েছে। পানি দ্রæত নামানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে বিভিন্ন খাল পরিস্কার করছি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)