পুলিশকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ
সম্প্রতি গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া) ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আংশিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঢালাও প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ)। সংগঠনটি এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে ভবিষ্যতে পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন ও সাংবাদিকতার নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণের অনুরোধ জানিয়েছে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া ও তার পরিবারের সম্পদ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করার পর গত ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন বেনজীর।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তর মিলনায়তনে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক সভা হয়। এতে কেউ কেউ এ ধরনের খবর প্রকাশে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলেন। সভার পরদিন পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞপ্তি এলো।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম এবং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল সই করে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- কোনো কোনো গণমাধ্যম ব্যক্তিগত আক্রোশ ও নিজস্ব স্বার্থ রক্ষায় কোনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করছে, যা সাংবাদিকতার নীতিমালার বিরোধী। এমতাবস্থায় কী কারণে, কার উদ্দেশ্য হাসিল এবং কার নির্দেশ (ম্যানডেট) বাস্তবায়নের জন্য কতিপয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের কুৎসা রটনায় লিপ্ত, সেই প্রশ্ন উত্থাপন করা অযৌক্তিক নয়।
পুলিশ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সব সময় ‘জিরো টলারেন্স’ (শূন্য সহনশীলতা) নীতি অনুসরণ করে আসছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়, কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হয় না। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনাকে বরাবরই স্বাগত জানানো হয়; কিন্তু গণমাধ্যমে কোনো খণ্ডিত বা আংশিক সংবাদ প্রকাশের তারা প্রতিবাদ করতে চান। গণমাধ্যমে কোনো ঘটনার সামগ্রিক চিত্র উঠে আসুক, সত্য উন্মোচিত হোক। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন হোক সত্যাশ্রয়ী ও বস্তুনিষ্ঠ।
নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশে পাঠকের কাছে গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, কোনো এক রহস্যময় কারণে একশ্রেণির গণমাধ্যম অতি সুকৌশলে পুলিশকে বিতর্কিত করে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অপচেষ্টায় মেতেছে, যা সৎ সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধকারী অপসাংবাদিকতারই নামান্তর বলে পরিগণিত হয়।
গণমাধ্যমের এ ধরনের একপেশে আচরণ সাধারণ পাঠকের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এ ধরনের অপসাংবাদিকতা পুলিশের সৎ, নিষ্ঠাবান, পেশাদার ও দেশপ্রেমিক সদস্যদের মনোবল ধ্বংসের অপপ্রয়াস বলে প্রতীয়মান হয়, যা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, এ ধরনের অপপ্রচার সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত করা এবং দেশবিরোধী চক্রান্তের অপকৌশল কিনা, তা বিবেচনার দাবি রাখে। ফলে পুলিশি সেবাপ্রত্যাশী মানুষ, তথা দেশ ও জাতি সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
পুলিশ কখনই গণমাধ্যমের কাছে এ ধরনের অপেশাদারি সাংবাদিকতা প্রত্যাশা করে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এতে জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)