রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিএনপির রূপরেখা হাস্যকর: ওবায়দুল কাদের
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বিএনপি যে রূপরেখা দিয়েছে তা অত্যন্ত হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির প্রস্তাব রোহিঙ্গা সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে দাবি করে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে যা যা করার সবই করছে সরকার।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই কথা বলেন।
গতকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে রূপরেখা তুলে ধরে বিএনপি। সেখানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে না পারায় দলটি সরকারকে দায়ী করে। সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় দাবি করে বিএনপি বলেছে, তারা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে পাঠাবে।
বিএনপির রূপরেখার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যে রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়েছে তা অত্যন্ত হাস্যকর এবং রোহিঙ্গা সংকটকে আরও ঘনীভূত করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ ছাড়া আর কিছু নয়।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে পার্বত্য অঞ্চলে অশান্তির সূচনা হয়। সেই অশান্ত পাহাড়ে শান্তির পতাকা উড়িয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
জিয়াউর রহমানের আমলেই রোহিঙ্গা সংকটের শুরু উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি যতবার ক্ষমতায় এসেছে এই সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। বিএনপি কোনো সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও সংকট সৃষ্টি করতে পারে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে বাংলাদেশ কোনো পক্ষ নয়, পক্ষ হলো দুটি— একটি মিয়ানমান সরকার, অন্যটি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এই দুপক্ষের বিবাদমান সমস্যার বিরূপ প্রভাবের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ।’
এই সংকট সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার গৃহীত উদ্যোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বদরবারে একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের সাফল্য সর্বক্ষেত্রে অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পাশাপাশি ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং কূটনৈতিক সাফল্যের কারণে কৌশলগত ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আরও সুসংহত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে আমাদের এই সাফল্যের অভিযাত্রা অব্যাহত থাকবে। কোনো প্রকার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতৃবৃন্দ বারবার তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে জনগণের মধ্যে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক গুরুত্ব নেই। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের প্রতি যে দায়িত্ববোধ ও সংবেদনশীলতা দেখানো প্রয়োজন বিএনপি তা বিগত দিনে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে তাদের রাজনৈতিক শক্তির সাংগঠনিক ভিত্তি জনগণের মধ্যে প্রোথিত নেই। জনগণের ওপর আস্থা না রেখে যেকোনো উপায়ে ক্ষমতার মসনদে বসার জন্য তারা বরাবরই বিদেশি প্রভুদের দ্বারস্থ হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যে তাদের তথাকথিত আন্দোলনে আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের নিকট করুণা ভিক্ষার মধ্য দিয়ে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল কতটুকু দেউলিয়া ও নির্লজ্জ হলে এই ধরনের অবিবেচনাপ্রসূত আবেদন জানাতে পারে!’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)