সাতক্ষীরায় তরুনীকে ধর্ম পরিবর্তন করে বিবাহের ৩ মাস পর তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ
প্রেমের ফাঁদে ফেলে মৌলভীবাজারের সনাতন ধর্মের তরুনীকে সাতক্ষীরায় এনে ধর্ম পরিবর্তন করে নগদ অর্থ হাতিয়ে বিবাহের ৩ মাস পর তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মৌলভী বাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানার মাকরিছড়া গ্রামের কৃষ্য অলমিকের কন্য নবমুসিলম আমেনা খাতুন ওরফে সাবিত্রী (সতী)।
তিনি বলেন, বিগত ৪ বছর পূর্বে মোবাইলের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদরের গাভা গ্রামের আলমগীর হোসেনের পুত্র মাছুম বিল্লাহের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক দীর্ঘদিন থাকায় বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে কৌশলে ২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় মাছুম বিল্লাহ। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ককে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য বিবাহের প্রস্তাব দেয় মাছুম। আমি সরল বিশ^াসে পিতার বাড়ি থেকে আরো কিছু নগদ টাকা নিয়ে চলে আসি। সাতক্ষীরায় আসার পর মাছুমের মাতা নাজমা খাতুন এবং মাছুম আমাকে বাড়ি নিয়ে যায়। ২৪ মার্চ ২০২৪ তারিখে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আমার ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায়। পরে স্থানীয় ওসমান গনিকে আমার পিতা সাজিয়ে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন হয়। শুধুমাত্র মাছুমের সাথে সুখে শান্তিতে সংসার করার আশ^াসে পিতার ধর্ম পরিবর্তন করে আমার সর্বশ^ই মাছুমের কাছে সপে দিয়েছি। কিন্তু ৩ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর শ^াশুড়ী আমাকে বলে, বাড়িতে অভাব তোমরা দুইজন ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টে চাকুরি কর। তবে চাকুরি করতে গেলে পিতার বাড়ি থেকে তোমার সকল কাগজপত্র নিয়ে আসতে হবে। আমি স্বামীকে সাথে নিয়ে যেতে চাইলেও আমাকে নিতে দেইনি। তাদের কথায় বিশ^াস স্থাপন করে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে স্বামী আমার মাথায় সিঁদুর লাগিয়ে দিয়ে বলে, পিতার বাড়িতে গিয়ে বলবে “আমি হিন্দু ছেলেকে বিবাহ করেছি”। সে সময় আমি তাদের ছলচাতুরি বুঝতে পারিনি। পিতার বাড়ি থেকে ফিরে আসার পর দেখি স্বামী বাড়িতে নেই। ঘরে তালা দেওয়া। আমি ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার শ^াশুড়ী , শ^শুর আলম মোড়ল, মৃত ছোবাহান সানার পুত্র জমায়েত হোসেন সানা, জমায়েত হোসেন সানার কন্যা রহিমা খাতুন, মৃত রাজাউল্লাহ সরদারের পুত্র মামুন সরদারগং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে এবং মারপিট করতে থাকে। একপর্যায়ে আমাকে একটি বদ্ধ ঘরের মধ্যে নিয়ে অস্ত্র দেখিয়ে জবাই করে হত্যার হুমকি প্রদর্শন করে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরে জমায়েত হোসেনসহ কয়েকজন আমাকে জোরপূর্বক মামুন পরিবহনে তুলে দিয়ে সুপারভাইজারকে মৌলভীবাজার নামিয়ে দিতে বলে। পিতার বাড়িতে গেলে তারা আমাকে তাড়িয়ে দেয়। আমি মুসলিম কারনে তাদের সাথে আমাকে রাখতে চান না। উপায়ন্তর হয়ে পুনরায় সাতক্ষীরায় এসে স্বামীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু তার নাম্বার বন্ধ। স্থানীয় ইউপি মেম্বর আমাকে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যায়। তিনি আমাকে ওসমান গণি গাইনের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। আমি পিতার কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে সবই তার কাছে তুলে দিয়েছি। আমার সাথে এতবড় প্রতারনা করবে আমি ভাবতে পারেনি। আমি এখন কোথায় যাবো? পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেই, স্বামীর বাড়িতে যেতে পারি না। আমার স্বামীর বাড়িতে জায়গা না হলে আমার মৃত্যু ছাড়া আর কোন রাস্তা থাকবে না। তিনি ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)