কলারোয়ায় পুকুরপাড়ে আশ্রায়ণের ৭টি ঘর! ঝুঁকি এড়াতে ভেঙে অন্যত্র
কলারোয়ায় আশ্রায়ণ প্রকল্পের ৭টি ঝুঁকির কারণে ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের তৈলকুপি গ্রামে সপ্তাহখানেক আগে ওই ঘর সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে জানা গেছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন মানুষদের জন্য এসব ঘর তৈরি করা হয়। এর প্রতিটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
কলারোয়ার সাবেক ইউএনও মৌসুমী জেরিন কান্তার দায়িত্বকালে ও তত্ত্বাবধানে পুকুরপাড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওই ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। পুকুরপাড়ে ঝুঁকি থাকলেও ঘর নির্মাণ করার পাশাপাশি বরং পুকুর ভরাটের জন্য বাড়তি বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা হয় বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। তবু সেই ঝুঁকি কাঁটেনি। সেসময় স্থানীয় প্রশাসনের দিকে আঙুল উঠলেও অদৃশ্য কারণে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
হতদরিদ্র ও অসহায়দের জন্য ওই সব ঘর বানানো হলেও তাদের বুঝিয়ে দেয়ার আগেই পরিস্থিতির কারণে অতি সম্প্রতি সেগুলো ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় লাঙলঝাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘরগুলো সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত জানালা-দরজাগুলো অন্য একটি ঘরের মধ্যে রাখা হয়। ইউএনওকে জিজ্ঞেস করলাম, স্যার, কী হচ্ছে? তখন তিনি জানালেন, এসব ঘরে লোকজন তুলে দিলে প্রাণহানির আশংকি রয়েছে। তাই ঘরগুলো সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।’
লাঙ্গলঝাড়ার ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘তৈলকুপি গ্রামের খাস জমিতে দুই সারিতে মোট ১৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়। একপাশে ৭টি, অপর পাশে ৬টি। কিন্তু পাশে পুকুর থেকে বালি তোলার কারণে ৭টি ঘর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। সেই ঘরগুলো ভেঙে অন্যত্র নেয়া হয়েছে।’
কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, ‘তৈলকুপি গ্রামে ঘর নির্মাণ করা হয় পুকুরের পাড়ে। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সদ্য বদলিকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি জেরিন কান্তা ঘরগুলো নির্মাণ করেন। অল্প দিনের মধ্যেই ঘরগুলো ধসে পড়ার উপক্রম ও আশঙ্কা দেখা দেয়। উপরন্তু পুকুর ভরাটের জন্য সেসা আরো ৬ লাখ টাকা খরচ করেন উপজেলা অফিস থেকে। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি।’
বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর ভাষ্য মতে, ‘ঘরগুলো তার পূর্বের নির্বাহী কর্মকর্তা নির্মাণ করেছেন। ঝুকিপূর্ণ স্থানে নির্মাণের কারণে ঘরগুলো অন্যত্র সরানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘরগুলো পুকুরের পাড়ে নির্মাণ করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে পুকুরে প্যালাসাইডিং দিয়ে ঘরগুলো বাঁচানোর চেষ্টাও করা হয়েছিলো। কিন্তু তাতেও তেমন কোন ফল না পেয়ে পরিষদের সকলের সাথে আলোচনা করে ঘরগুলো ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নে একটি জায়গা পাওয়ায় ঘরগুলো ভেঙে সেখানে নির্মাণের জন্য নেওয়া হয়।’
অর্থ অপচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বসবাসকারীদের জীবনের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ঘরগুলো সরানো হয়েছে।’
‘এখানে টাকার চেয়ে জীবনের কথা বেশি বিবেচনা করা হয়েছে’ বলে তিনি মনে করেন।
তথ্যসূত্র : পত্রদূত
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)