পিএসজি মেসিকে কিনে ‘বিপদে’


দুনিয়ার সব তারকা ফুটবলার যেন নিজেদের ডেরায় নিয়ে আসার পণ করেছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। নেইমার, কিলিয়ান এমবাপেদের নিয়ে সাজানো আক্রমণভাগে এবার তারা যোগ করেছে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিকে।
এই মৌসুমেই আবার সার্জিও রামোসের মতো ডিফেন্ডার, তারকা গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডোনারোমাকেও দলে টেনেছে পিএসজি। শোনা যাচ্ছে, সামনের মৌসুমে নাকি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকেও কেনার ইচ্ছে ক্লাবটির।
কিন্তু টাকা থাকলেই কি যা খুশি তাই করা যায়? পিএসজি মালিক নাসের আল খেলাইফির কিন্তু উয়েফার ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে নীতির কথাও মাথায় রাখতে হবে।
ক্লাবের আয়-ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে ২০০৯ সালে এই নীতি চালু করে উয়েফা। ক্লাবগুলো যেন তাদের আয়ের বেশি ব্যয় করতে না পারে, দলবদলের বাজারে যেন ভারসাম্য থাকে সেজন্যই এই নিয়ম।
প্রশ্ন উঠেছে, মেসিকে কেনার বেলায় কি এই নিয়ম মেনেছে পিএসজি? এর আগে কিন্তু পিএসজি ও ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল। এবারও কি সেটাই হলো?
প্রথমত, এখানে কিছু ব্যাপার আছে। উয়েফার সামনের ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লের রিভিউ হবে ২০২১-২২ মৌসুমের শেষে। এখানে সর্বশেষ দুই মৌসুমের হিসেব-নিকেশ হবে। লা লিগার মতো এখানে রিভিউ মৌসুমের শুরুতে হয় না।
আরেকটি ব্যাপার হলো, লা লিগায় ২০১৩ সালের পর থেকে সেলারি ক্যাপ চালু আছে, যা কিনা ফরাসি লিগ ওয়ানে নেই। অর্থাৎ খেলোয়াড়দের বেতনে মোট কত টাকা খরচ করতে পারবে কোনো ক্লাব, তার বাধ্যবোধকতা নেই।
তারপরও গত মৌসুমে ২০০ মিলিয়ন ইউরো হারিয়েছে পিএসজি। এবার তাদের স্কোয়াডে খরচ ৩০০ মিলিয়নের বেশি। উয়েফার ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লেতে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য নীতিতেও আটকে যেতে পারে পিএসজি।
পিএসজি স্কোয়াডে সবচেয়ে বেশি আয় এখন মেসির। তার বার্ষিক বেতন ৪০ মিলিয়ন ইউরো। নেইমারের ৩৬.৮ মিলিয়ন এবং এমবাপের বার্ষিক বেতন ২৫ মিলিয়ন ইউরো।
আক্রমণভাগেই শুধু নয়, পুরো দলেই বেশ খরচ পিএসজির। সার্জিও রামোসকে তারা কিনেছে বার্ষিক ২০ মিলিয়ন ইউরোতে। ডোনারোমা, মার্কুইনহস, মার্কো ভেরাত্তি, অ্যাঞ্জেল ডি মারি, কেইলর নাভাস, প্রেসনেল কিমপেম্বে এবং মাওরো ইকার্দির এক-একজনের বেতন ১০ থেকে ১০ মিলিয়ন ইউরো।
পিএসজিকে সুপার-টিম বানাতে তাই কঠিন অংকই মেলাতে হবে মালিক নাসের আল খেলাইফিকে। ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লের নিয়ম মেনে তারা নিজেদের সব তারকাকে ধরে রাখতে পারবে কিনা, সেই সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
রিয়াল মাদ্রিদ এই সুযোগে কিলিয়ান এমবাপেকে দলে টানার চেষ্টা করছে। যদি খেলাইফি ফরাসি স্ট্রাইকারকে ছাড়তে বাধ্য হন, তবে এক মুহূর্তও দেরি করবে না রিয়াল।
এদিকে বায়ার্ন মিউনিখও উয়েফার ওপর চাপ বাড়াতে যাচ্ছে। এর আগে পিএসজি এবং ম্যানচেস্টার সিটির প্রতি শৈথিল্য প্রদর্শন করা হয়েছে এমন অভিযোগ থাকায় এবার তারা উয়েফাকে কঠোরভাবে নিয়ম প্রয়োগে তাড়া দিতে পারে।
এদিকে লা লিগা প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাসও মনে করছেন, ফরাসি ক্লাবটি সামনে কঠিন বিপদে পড়বে। তেবাস বলেন, ‘পিএসজিকে তাদের অনেক কিছুতে ভারসাম্য আনতে হবে। তাদের এই গ্রীষ্মে অবশ্যই একজন খেলোয়াড় ছাড়তে হবে। আমি মনে করি, এটা তাদের জন্য জটিল পরিস্থিতি।’

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
