সাতক্ষীরায় অপহরণ, ধর্ষণের পর ভারতে পাচারের চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন


সাতক্ষীরায় ধর্ষণ মামলার আসামী আশাশুনি উপজেলার কাপসন্ডা গ্রামের সহিল উদ্দীন মোল্যার ছেলে ফারুকের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে অপহরণ করে গণধর্ষণের পর ভারতে পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ধামরাইল গ্রামের মোস্তফা সরদারের স্ত্রী সাবিরা খাতুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ইতিপূর্বে আমরা সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাপসন্ডা গ্রামে বসবাস করতাম। আমার স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগে ফারুক ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণ করে। এঘটনায় আমি মামলা দায়ের করলে পুলিশ ফারুককে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। লোক লজ্জার ভয়ে আমি স্বপরিবারে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ধামরাইল গ্রামে এসে বসবাস শুরু করি। গত ২৫ সেপ্টেম্বর তালায় ডাক্তার দেখিয়ে খুলনায় জামাতা শাহীনের বাসায় যাওয়ার পথে আমার চাচতো ভাসুরের ছেলে অহেদুল ইসলামের সাথে দেখা হলে সে তার সাথে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। সরল বিশ্বাসে আমি তার ইজিবাইকে গিয়ে দেখি তার বন্ধ চাপড়া গ্রামের আমিনুল এবং চিলেডাঙ্গা গ্রামের ইকবাল বসে আছে। খুলনার পথে গাড়িটি ভিন্ন রাস্তায় যেতে থাকার একপর্যায় পিছন থেকে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস আসে। তারা আমাকে ধরে ওই গাড়িতে উঠায়। গাড়ির মধ্যে ফারুক ও ধামরাইলের জামাল মোড়লের ছেলে শাহমত এবং মোছার উদ্দীনের ছেলে জালাল ছিল। গাড়িতে তোলার পর ফারুক, শাহমত ও জালাল আমার মুখে রুমাল চেপে ধরলে আমি অচেতন হয়ে পড়ি।
সাবিরা খাতুন আরো বলেন, জ্ঞান ফেরার পর আমি নিরব থেকে বুঝতে পারি তারা আমাকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছে। এসময় আমি ফারুকের পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে বলি আমাকে জীবন ভিক্ষা দাও, আমি তোমার মামলা তুলে নেব। কিন্তু ফারুক আমার কথা না শুনে একটি ঘরে আটকে রেখে মুখ হাত বেধে পালাক্রমে আমাকে ধর্ষন করে। একপর্যায় ফারুক রেগে গিয়ে আমার হাতে ছুরি দিয়ে আঘাত করে এবং শাহমত ও জালাল মাথায় আগাত করলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফেরার পর দেখতে পাই দুইজন অপরিচিত লোক মটর সাইকেলে বসিয়ে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। এসময় ধাক্কা দিলে গাড়ি পড়ে গেলে আমি কলারোয়ার লোহাকুড়া গ্রামের আলি হোসেনের বাড়িতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়ি। খবর পেয়ে কলারোয়া থানার পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার চিকিৎসাপত্রে ধর্ষণ এবং শারিরীক নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ আছে। কিন্তু কলারোয়া থানায় যে মামলা করা হয়েছে সেটি আমার কথামত লেখা হয়নি। আমাকে অপহরণের পর গণধর্ষণ করা হলো যা হাসপাতালের ছাড়পত্রে উল্লেখ আছে। কিন্তু মামলার এজাহারে নেই। ধর্ষণের ভিকটিমকে উদ্ধার করলে পুলিশের দায়িত্ব তাকে হাসপাতালে নিয়ে মেডিকেল টেষ্ট করানো এবং ২২ ধারায় ধর্ষিতার জবানবন্দি গ্রহণ করানো। কিন্তু ঘটনার ২০ দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়নি। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আমাকে সগযোগিতা না করে তালবাহনা করছে।
তিনি ফারুক ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
