ঝিকরগাছার শংকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সচিবের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রতারণা
ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বয়স বাড়িয়ে জন্ম নিবন্ধন তৈরী করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা বাণিজ্য করে অভিনব ভাবে প্রতারণা করছে মিজানুর রহমান নামে ধুরন্ধর এক প্রতারক।
সঠিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে প্রতারক মিজানুরের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ হতে চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নিছার উদ্দীন ও ইউপি সচিব জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে এ অভিযোগ দেন। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান শংকরপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
শংশ্লিষ্ট সুত্র ও তথ্যঅনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর ধরে জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়স বাড়ানো- কমানো, ভূল সংশোধন, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও সচিবের সীল-সাক্ষর সহ নানা জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রামের জনসাধারণের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল মিজানুর রহমান নামের ওই যুবক।
এ বিষয়ে সু-নিদিষ্ট অভিযোগ হাতে না থাকায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি ইউনিয়ন পরিষদ।
সম্প্রতি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুস সাত্তারের পুত্র ও কন্যা সুরাইয়া ইয়াসমিন তৃষা ও মোহাম্মদ আল মামুন হৃদয় পাসপোর্ট তৈরি ও সুরাইয়া বিবাহের কজে জন্মনিবন্ধে বয়স বাড়ানোর জন্য তার কাছে গেলে সে মোটা টাকা চুক্তির বিনিময়ে বয়স বাড়িয়ে চেয়ারম্যান ও সচিবের সিল-স্বাক্ষর জাল করে জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে দেয়। জন্ম সনদটি আল মামুন পার্সপোর্ট অফিসে জমা দিলে সেখানে দেখা যায়, জমা দেওয়া জন্ম সনদের সাথে অনলাইনে থাকা সনদে বয়সের গড়মিল। পরে আল মামুন নিবন্ধনটি অনলাইন করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসলে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের ইউডিসি নয়ন রেজা জালিয়াতির বিষয়টি বুঝতে পেরে ইউপি সচিব জাহাঙ্গীর আলম কে জানালে তিনি বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানান। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নিছার আলী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পোষ্ট-ই সেন্টারের উদ্যোক্তা মিজানুর রহমান নামের ওই যুবকের জালিয়াতির বিষয়ে আগে থেকেই আমার কাছে তথ্য ছিল। কিন্তু হাতে-নাতে ধরতে না পারায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি।
এখন আমাদের কাছে সু-নিদিষ্ট প্রমাণ আছে। তাই আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, মিজানুর তার অপরাধের কথা আমার কাছে ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান ধবকের সামনে স্বিকার করে ক্ষমা চেয়েছে। মিজানুর তার সন্তানের মাথায় হাত রেখে ওয়াদা করে ক্ষমা চেয়েছিল। আমি একটু সুযোগ দিয়েছিলাম দেখি সংশোধন হয় কি কিন্তু তার ভিতরে কোন পরিবর্তন আসেনি। ৯ মে শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া শাখার সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার – আমাকে মোবাইলের মাধ্যমে বলে আপনি কি ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে সিল ও সাক্ষর করে বয়স্ক ভাতার টাকা নেওয়ার জন্য কাউকে পাঠিয়েছেন? আমি দ্রুত ব্যাংকে পৌছে দেখলাম আমার সিল ও সাক্ষর জালিয়াতি করে ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত্যু আফতাব সর্দারের ছেলে মৃত্যু কওছার আলীর বয়স্ক ভাতার টাকা উঠিনোর জন্য এই জালিয়াতি করে মিজানুর রহমান।
আইন অনুযায়ী যা করতে হয়,তা আমরা করব। এই বিষয়ে সোনলী ব্যাংকের ম্যানেজার সাংবাদিকদের জানান, আমার বিষয়টি সন্দেহ হয়েছিল তাই আমি চেয়ারম্যান কে অবগত করি। আমার অনুরোধ এটা নিয়ে কিছু করার দরকার নাই। মিজানুর রহমান আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বলেন, একটি মহল আমার নামে মিথ্যা তথ্য রটাচ্ছে। আমি ধুয়া তুলশী পাতা না হলেও সব অভিযোগ সত্য নয়। আমার নামে অভিযোগ পেলে প্রশাসন তার কাজ করবে। এ বিষয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত রহমান বলেন, আমার জানা মতে এই বিষয়ে লিখিত কোন অভিযোগ আসে নাই। অভিযোগ হাতে এলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)