মৃত মায়ের ফ্ল্যাট পরিষ্কার করতে গিয়ে খুলল ভাগ্যের তালা!
নাম তার কেলি ফার্থ, বয়স ৪৪। ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট হ্যালিফ্যাক্স এলাকার বাসিন্দা। গত ২০২১ সালের মে মাসে তার ক্যারলের মৃত্যু হয়। মা বেঁচে থাকতে প্রতি সপ্তাহে তার জন্য লটারির টিকিট কিনতেন কেলি, যদিও মায়ের মতো তার লটারির নেশা ছিল না। কিন্তু কেলির মায়ের ভাগ্যে কখনও লটারি লাগেনি।
সেই মায়ের ফ্ল্যাট পরিষ্কার করতে গিয়েই লক্ষাধিক টাকার লটারি জিতলেন কেলি।
গত বছরের মে মাসে মাকে হারিয়েছেন কেলি। সম্প্রতি মায়ের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন পরিষ্কার করতে। সেটি গোছানোর সময় তার হাতে চলে আসে একটি কার্ড।
ওই কার্ডে পাঁচটি নম্বর লিখে রেখেছিলেন কেলির মা ক্যারল। যা দেখে পুরনো কথা মনে পড়ে গিয়েছিল কেলির। প্রতি সপ্তাহে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির কাছের দোকানে ছুটতেন তিনি। ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মায়ের জন্য তিনি কিনতেন লোটো হটপিকস লটারির টিকিট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে কেলি জানিয়েছেন, ওই কার্ডে লেখা ছিল ৭, ১৭ এবং ৩৭— এই নম্বরগুলো। প্রতি বার লটারির মেশিনে এই নম্বর নিয়ে খেলতেন তার মা।
মায়ের স্মৃতিতেই ওই নম্বর দিয়ে লটারিতে ভাগ্যপরীক্ষা করা স্থির করেন কেলি। ওয়েস্ট হ্যালিফ্যাক্সের যে দোকান থেকে মায়ের জন্য লটারি কিনতেন, সেখানেই বুধ এবং শনিবারের লাকি ড্রয়ে ওই নম্বর দিয়ে লটারি খেলবেন বলে ভেবে নেন।
তবে প্রথমবারের চেষ্টায় নিরাশ হতে হয়েছিল কেলিকে। বুধবারের লাকি ড্রয়ে একসঙ্গে ৭-১৭-৩৭ নম্বর ভেসে ওঠেনি লটারির মেশিনে। তবে সপ্তাহান্তে ভাগ্য খুলে যায় কেলির।
বুধবারের লাকি ড্রয়ে লটারি জিততে না পেরে সেই টিকিটটি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন কেলি। টুকরো টুকরো করা সেই টিকিটটি ফেলে দিয়েছিলেন তাদের আবাসনের বাইরের ডাস্টবিনে।
তবে শনিবার টেলিভিশনে লাকি ড্রয়ের ফলাফল দেখে চমকে যান। মায়ের লেখা ওই নম্বরেই তিনি জিতেছেন ১,৬০০ পাউন্ড, বাংলাদিশ মুদ্রায় এক লাখ ৮৭ হাজার টাকারও বেশি।
সংবাদমাধ্যমের কাছে কেলি জানিয়েছেন, লটারি জেতার আনন্দে রেডিও খুলতেই আরও একবার হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। রেডিওতে বাজছে তার মায়ের প্রিয় গান— টিনা টার্নারের ‘ইউ আর সিম্পলি দ্য বেস্ট’।
সংবাদমাধ্যমের কাছে তার লটারি জেতার কাহিনি শুনিয়েছেন কেলি। জানিয়েছেন, শনিবারের লাকি ড্রয়ে লটারি জেতার খবর শুনে আবাসনের ডাস্টবিন ঘেঁটে ওই ছেঁড়া টিকিটটি খুঁজে বের করেছিলেন তিনি। তারপর সেটি জোড়া লাগিয়ে ছুটেছিলেন লটারির দোকানে।
কেলি বলেন, “মায়ের নম্বর দিয়ে যে লটারি জিতেছি, তা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না! মেয়েকে নিয়ে তো প্রতি সপ্তাহেই মায়ের জন্য লটারির টিকিট কিনতে ছুটতাম! একটা ছোট কার্ডে প্রতিবার একই নম্বর লিখে রাখতেন মা। বছরের পর বছর ধরে একই নম্বরে লটারি খেলতেন। তবে কোনওবারই জিততে পারেননি। মায়ের স্মৃতিতেই ওই নম্বর দিয়ে লটারি খেলেছি।”
লটারি জেতার পর মায়ের কথাই বেশি করে মনে পড়ছে কেলির। তার কথায়, “লাকি ড্রয়ে যখন নম্বরগুলো এল তখনও জানতাম, মা এখনও আমার আশপাশেই রয়েছেন। তবে আমি এখনও হতচকিত!”
অর্থ জয়ের পর কী করবেন? সংবাদমাধ্যমের এ প্রশ্নের জবাবে কেলি বলেন, “পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ব্ল্যাকপুলে ছুটি কাটাতে যাব।” কেলি জানিয়েছেন, ব্ল্যাকপুলের সমুদ্রতটে মেয়ে ডেমি এবং তার চার সন্তানকে নিয়ে কিছু দিন সময় কাটাতে চান তিনি।
লটারির নম্বরের মতো ছুটি কাটানোর জায়গা বাছার ক্ষেত্রেও মায়ের পছন্দই আগে মনে এসেছে কেলির। তিনি বলেন, “(ছুটি কাটাতে) ব্ল্যাকপুলে যেতে ভালবাসতেন মা। ওই নম্বরগুলো যে তার কাছে বিশেষ কিছু ছিল, তা জানতাম। আর ওই নম্বরগুলোই আমাদের জীবনে সুখস্মৃতি এনে দিয়েছে।”
কেলি আরও বলেন, “আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিলেন মা। প্রতিদিন মায়ের অভাব বোধ করি। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে ওই নম্বরগুলো আমাদের ভাগ্য ফিরিয়ে দিয়েছে। মা নিশ্চয়ই ওপর থেকে আমাদের দেখছেন।”
সূত্র: ডেইলি মেইল
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)