নৌকার সাথে স্বতন্ত্রের প্রতিদ্বন্দ্বীতা
সাতক্ষীরা-১ আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াচ্ছেন বর্তমান ও সাবেক এমপি!
আবুল কাসেম ও আতাউর রহমান: সাতক্ষীরা-১ আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সাথেও প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে পারে।
নৌকা প্রতীক না দেয়ায় নির্বাচন থেকে সরে দাড়াচ্ছেন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। আর নির্বাচন করবেন না বলে জানালেন সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমানও। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) মুঠোফোনে তারা এ কথা জানান।
তবে নির্বাচন করবেন না বলে জানালেও ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে তারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় ব্যালট পেপারে তাদের নাম ও প্রতীক থাকছে।
সাতক্ষীরা জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরা-১ আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১০ প্রার্থী রয়েছেন। তার মধ্যে ফিরোজ আহমেদ স্বপনের নৌকা, সৈয়দ দীদার বখতের লাঙ্গল ও মুস্তফা লুৎফুল্লাহর কাস্তে-হাতুড়ি রয়েছে।
সাতক্ষীরা-১ আসনটি তালা ও কলারোয়া উপজেলার ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ আসন থেকে জয়লাভ করেন। ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সরদার মুজিবকে পরাজিত করেন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। ২০১৮ সালেও তিনি নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। তবে এবার শেষ মুহুর্তে প্রত্যাহারের আদেশ না আসায় নৌকা প্রতীক পেয়েছেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন। বিপুল নেতা-কর্মী নিয়ে ফিরোজ আহমেদ স্বপন রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে আসনে প্রতীক বরাদ্দ নিতে।
প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হচ্ছেন ফিরোজ আহমেদ স্বপন।
তিনি বলেন, ‘আমার মনোনয়নপ্রাপ্তিতে তালা-কলারোয়ায় গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আমার বিজয় নিশ্চিত। শেখ হাসিনার উন্নয়নে লোকজন নৌকায় ভোট দেবে।’
বিজয়ের বিষয়ে ব্যাপক আশাবাদি ১৮ সালের আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দেই। তালা-কলারোয়ার অলিগলি আমি চিনি। জনগণ আমাকে ভোট দেবে।’
এছাড়াও নিজেকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দাবি করেন ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোট পাওয়া প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সৈনিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরদার মুজিব।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু স্বতন্ত্র ভোট আমি করেছি। তাই ভোটের মাঠের হিসেবে আমি বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ।’
সাতক্ষীরা-১ আসনে জাতীয় পার্টির অবস্থান বেশ শক্তিশালী ছিলো। বর্তমানে সেই অবস্থা না থাকলেও ব্যক্তি হিসেবে ভোটারদের মনে জায়গা রয়েছে এরশাদ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দীদার বখতের।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সৈয়দ দীদার বখত তালা ও কলারোয়ার উন্নয়নের রূপকার। তিনি সবার কল্যাণ করেছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি পাশ করবেন।’
এদিকে, সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরো সদস্য ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
সেলফোনে মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, ‘১৪ দলের ৭টি আসনে ছাড় দেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত ছিলো। সাতক্ষীরা-১ আসন সেই ৭টি আসনের মধ্যে ছিরো। কিন্তু শেষ মুহুর্তে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়পত্র প্রত্যাহার না করায় আমি নির্বাচনে যাচ্ছি না।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতীক পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমানও।
মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচব করবো না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন আমি কাউকে সমর্থন করছি না।’
তাহলে কেন একদিন আগে বর্তমান ও সাবেক এমপি তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন নি -সেটা জানা যায়নি।
এদিকে, সোমবার দুপুরে কলারোয়া বাসস্ট্যান্ডস্থ বিশ্বাস মার্কেটে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরদার মুজিবসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ওই সমাবেশে সরদার মুজিব দাবি করেন অপর এক বা একাধিক স্বতন্ত্র ও অন্য প্রার্থী তাকে সমর্থন দিবেন।
অপরদিকে, প্রতীক বরাদ্দের পর দুপুর থেকে প্রচার মাইকে নৌকার সমর্থনে মুখোর হয়ে ওঠে গোটা নির্বাচনী এলাকা। সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকায় নৌকার প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের সমর্থনে প্রচার মিছিল বের করে কর্মী-সমর্থকরা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)