বাঁচা মরার লড়াইয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান

একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ
হয় বাঁচো না হয় মরো। এমন সমীকরণ নিয়ে রোববার বাংলাদেশ-পাকিস্তান মুখোমুখি হলেও, জয় কোন দলের জন্যই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে খেলা নিশ্চিত হবে। এজন্য নির্ভর করতে হবে একই দিনে অন্য দুই ম্যাচের ফলের উপরে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরটি এতোটাই প্রতিযোগিতামূরক হয়ে উঠেছে যে, দুই নম্বর গ্রুপের ছয় দলের মধ্যে পাঁচ দলের জন্য শেষ পর্যন্ত সেমিতে খেলার সুযোগ রয়েছে। একই রকম গল্প ছিলো এক নম্বর গ্রুপে। নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের ভাগ্য ঠিক হয়েছে গ্রুপের শেষ দিনেই।
রোববার এডিলেডে বাংলাদেশ-পাকিস্তান মুখোমুখি হবে নিজেদের ভাগ্য নিজেদের হাতে নিয়েই। কিছু হিসাবে সেমিতে যাবার পথে পাকিস্তান কিছুটা এগিয়ে থাকলেও, জয় ছাড়া কোন গতিই নেই কারো নামনে। বাংলাদেশও ম্যাচটি ভালোভাবে জিততে পারলে খেলতে পারে সেমিতে।
গ্রুপ দুইতে চারটি করে ম্যাচ খেলে সমান চার পয়েন্ট বাংলাদেশ-পাকিস্তানের। তবে সামগ্রিক রানরেটে এগিয়ে থাকায় তালিকার তিনে আছে পাকিস্তান, বাংলাদেশের অবস্থান চারে। এতে কিছু যায় আসে না। কারণ, যেই জিতুক না কেন, চেয়ে থাকতে হবে অন্য দুই ম্যাচের দিকে।
নিজেদের ম্যাচ তো জিততে হবেই, তার আগে ভোরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে হবে ডাচদের কাছে। অথবা ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও চলবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতলে চেয়ে থাকতে হবে জিম্বাবুয়ের দিকে। জিম্বাবুইয়ানরা ভারতকে হারাতে পারলেই কেবল শেষ চারে খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান। সেখানেও আছে রান রেটের হিসাব।
বাংলাদেশ সময় সকাল দশটায় মাঠে নামার আগে সাকিবরা অনুপ্রেরণা নিতে পারে আগের ম্যাচে ভারতের কাছে লড়িয়ে হার থেকে। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ পাঁচ রানে হারলেও, বিরাট কোহলির ভুয়া ফিল্ডিং বিতর্ক ভারতের জয়কে কালিমা লেপে দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এবারের আসরটি বাংলাদেশের জন্য সেরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তবে, শীর্ষ দলের বিপক্ষে জয় এখনও অধরা বাংলাদেশের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের পর গত ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জয়ের দ্বারপ্রান্তেই পৌঁছে গিয়েছিলো বাংলাদেশ।
২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় বাংলাদেশ। আসরটিতে শীর্ষ দলের বিপক্ষে এটিই একমাত্র জয় টাইগারদের। এরপর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এবং অন্যান্য টুর্নামেন্টে বেশ কিছু বড় দলকে হারায়, তবে খুব বেশি নয়। কিন্তু ২০২১ বিশ্বকাপের পর থেকে কোনও শীর্ষ দলকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। যা এই ফরম্যাটে টাইগারদের দুর্বলতাকে ফুটিয়ে তুলে।
বাংলাদেশের টেকনিক্যাল পরামর্শক শ্রীধরন শ্রীরাম বলেন, আমরা ভারতের বিপক্ষে প্রতিন্দ্বন্দিতা করেছি। আমরা ইতিমধ্যে দুইটি ম্যাচ জিতেছি এবং এটিই এখন পর্যন্ত আমাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা আসর। এটি নিয়ে ছেলেদের গর্ব করা উচিত এবং যে কোন দলকে হারাতে আমরা সত্যিই আত্মবিশ্বাসী।
তিনি আরও বলেন, ভারতের ম্যাচে যা ঘটেছিল তা এখন অতীত এবং এখন পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলায় মনোযোগ।
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচটি বাদ দিলে প্রতি ম্যাচেই ভালো লড়াই করেছে বাংলাদেশ। লড়াইয়ের এই ধারাবাহিকতায় খুশি শ্রীরাম। আগস্টে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর এশিয়া কাপ, সংযুক্ত আরব আমিরাত সিরিজ ও নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে দল সামলেছেন তিনি।
শ্রীরাম বলেন, আমার মনে হয় এটা নতুন শুরু। নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমরা দুটো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ জিতেছি। ভারতের বিপক্ষেও এভাবে হেরেছি, কিন্তু এটা হয়ই। এটাকে আমি নতুন শুরু হিসেবে দেখছি। অতীত নিয়ে থাকি না, এটাকে নতুন শুরু হিসেবে দেখি। অতীতে আমি ছিলাম না, তাই মন্তব্য করতে পারি না।
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ১৭ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এরমধ্যে ১৫ বার জিতেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের জয় দুইট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই জিতেছে পাকিস্তান। এই বৈশ্বিক ইভেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনভাবেই বাংলাদেশের তুলনা করা যায়না।
পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততে না পারার আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকলেও, বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রতিন্দ্বন্দিতার দু’বার হারতে হয়েছিলো বাংলাদেশকে। এবার এশিয়ার জায়ান্টদের হারাতে চান শ্রীরাম।
ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম খেলায় জয়ের ভালো সুযোগ ছিলো বাংলাদেশের। মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ম্যাচটি ২১ রানে হেরেছিলো টাইগাররা। ফিরতি পর্বে ছয় উইকেটে ১৭৩ রান করার পরও বাজে বোলিংয়ের কারনে ম্যাচটি হারতে হয় টাইগারদের।
শ্রীরাম জানান, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে বাংলাদেশ এবং নিজেদের উন্নতি দেখাতে প্রস্তুত তারা। পাকিস্তান খুব ভালো দল। কিন্তু আমরা তাদের বিপক্ষে অনেক ম্যাচ খেলেছি। তারা আমাদের শক্তি সম্পর্কে সচেতন এবং আমরাও তাদের সম্পর্কে সচেতন। এটি দারুন একটি ম্যাচ হবে।
পাকিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলে গাণিতিকভাবে সেমিফাইনালে যেতে পারে বাংলাদেশ। অবশ্য এজন্য নিজেদের শেষ খেলায় জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডসের কাছে হারতে হবে ভারত বা দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
চিরপ্রতিন্দ্বন্দি ভারতের কাছে হার ও জিম্বাবুয়ের কাছে হতাশার হারের পর সেমির দৌঁড়ে টিকে থাকতে ম্যাচটি জিততে মরিয়া পাকিস্তানও। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কেউ হারলে, সেমির আশা জাগবে পাকদের।
বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলী চৌধুরি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ ও এবাদত হোসেন।
পাকিস্তান দল: বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, আসিফ আলি, হায়দার আলি, হারিস রউফ, ইফতিখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ ওয়াসিম, নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, শান মাসুদ ও ফখর জামান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
কলারোয়ার কেঁড়াগাছিতে রাতব্যাপী ১৬দলীয় শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত
হাবিবুর রহমান সোহাগ: কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের কেঁড়াগাছি ফুটবল মাঠে সোনামাটি যুববিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়া ফুটবল টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন শ্যামনগর
কলারোয়া পাবলিক ইন্সটিটিউট ৮দলীয় নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টে ধুলিহর ইয়াং স্টার ফুটবলবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়া ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে শ্যামনগর
কলারোয়া পাবলিক ইন্সটিটিউট ৮দলীয় নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টে রুস্তম আলী ফুটবল একাদশবিস্তারিত পড়ুন
