সাতক্ষীরা মেডিকেলের ভিতরে করোনা রোগী, বাইরে ময়লার ভাগাড়!
সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল হাসপাতাল যেন ময়লার ভাগাড়। হাসপাতালে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী। তবে হাসপাতালের ভেতরে নেই কোনো ট্রায়াজ সিস্টেম। বাইরে পড়ে আছে বিভিন্ন ধরনের ক্লিনিক্যাল বজর্য। হাসপাতালে ঢোকার আগে ময়লা আর দুর্গন্ধে চলাফেরাই দায় হয়ে পড়েছে।
হাসপাতালের পরিবেশ হবে সুন্দর ও জীবাণুমুক্ত। কিন্তু, গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই নাকে দুর্গন্ধ অনুভব হয়। রোগীদের কোনও উপায় থাকে না বলেই ভেতরে যেতে হয়, চিকিৎসা নিতে হয়। ৭২ বছর বয়সী বাবাকে নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা আব্দুল আলিম এসব কথা বলেন। হাসপাতালের তিন তলায় ওঠার সিঁড়িতে কথা হয় ২৫ বছর বয়সী আশিক ইকবলের সঙ্গে। মা মফুরাকে নিয়ে এসেছেন তিনি। পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কথা বলতেই আশিক ইকবল তিন তলার সিঁড়ি থেকে দুই ভবনের মাঝের স্থান দেখিয়ে বলেন, এখানে যে কী পরিমাণ ময়লা জমা হয়ে থাকে, সেটা অকল্পনীয়।
রবিবার (৪ জুলাই) সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় নানা ধরনের আবর্জনা, জমে রয়েছে পানি ও হাসপাতাল চত্বরের ভেতরে পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। কর্তৃপক্ষ হাসপাতালজুড়ে ময়লার ভাগাড়ের জন্য দায়ী করছেন রোগীদের। আর নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণসামগ্রীর স্তুপের জন্য দায়ী করেছেন পৌরসভাকে।
প্রায় একই অভিযোগ সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া থেকে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে থাকা জামিলা বেগমের ও। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালের ভেতরের পরিবেশ যদি এমন হয়, তাহলে চিকিৎসা সেখানে কীভাবে হবে? এমন পরিবেশে চিকিৎসা নিলে তো সুস্থ হওয়ার বদলে অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে!
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতারের তত্বাবধায়ক শেখ কুদরত-ই-খোদা জানান, করোনার কারনে খেয়াল করা হয়নি আমি কালই দেখে পরিস্কার করার ব্যবস্থা করবো। তিনি আরও জানান প্রতিদিন করোনা রোগীর চাপ বেড়ছে। বর্তমানে প্রায় তিনশত রোগী চিকিৎসাধীন আছে। ইমারজেন্সি, সিসিইউ, আইসিইউ, ডায়ালাইসিস, মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, অর্থপেডিক্স, শিশু, শিশু সার্জারিসহ মোট ১৮ টি ইউনিট চালু আছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন চালু থাকার পাশাপাশি এখানে হাইফ্লোন্যাভেল ক্যানোলার সংখ্যা রয়েছে ৩৮ টি। আই.সি.ইউ বেড রয়েছে-৮ টি। জনবল সংকটে রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। সিনিয়র, জুনিয়র এবং সহকারী সার্জনসহ মোট ৫৮ টি পদের বিপরীতে গুরুত্বপূর্ণ ২৭ টি শুন্য পদ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। ৫০ জনের বিপরীতে পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছে মাত্র ২০ জন। ১৫ টি সিনিয়র নার্সের পদ শুন্য রয়েছে। জনবল চেয়ে ১৫ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি বরাবর তিনি পত্র প্রেরণ করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)