মার্কিন নির্বাচনে বাংলাদেশিদের জয়জয়কার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিভিন্ন পদে বাংলাদেশিদের জয়জয়কার। এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন চারজন বাংলাদেশি।
এর মধ্যে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য জর্জিয়া স্টেট সিনেটর হিসেবে বিজয়ী (ডিস্ট্রিক্ট-৫) হয়েছেন বাংলাদেশি আমেরিকান শেখ রহমান।
আর সর্বোচ্চ ভোটে নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে চতুর্থ মেয়াদের জন্য বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশি আমেরিকান আবুল বি খান।
এ ছাড়া পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের অডিটর জেনারেল পদে বিজয়ের পথে রয়েছেন ড. নীনা আহমেদ। তার জয়ের সম্ভাবনা বেশ প্রবল।
এর আগে এই স্টেটের রাজধানী ফিলাডেলফিয়ার ডেপুটি মেয়র এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়াবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন তিনি।
নীনা আহমেদ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে ভোটে লড়ছেন।
বুধবার ভোররাতে প্রাপ্ত সর্বশেষ সংবাদে পেনসিলভেনিয়া থেকে জানা গেছে, স্টেট অডিটর জেনারেল পদে ড. নীনা আহমেদ পেয়েছেন ৮ লাখ ১৮ হাজার ভোট। ৯ লাখ ৪৭ হাজার ভোট পেয়েছেন তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী টিমুথি ডিফোর। তবে ফিলাডেলফিয়া অঞ্চলে পোস্টাল ব্যালট এখনো গণনায় আসেনি। ৩০% ফলাফল এটি। আগেই বলা হয়েছে, পোস্টালে এসেছে ২৫ লাখ ভোট। এর অধিকাংশই ডেমোক্র্যাটদের। সেগুলো যথাযথভাবে গণনায় এলে নীনার বিজয়ের সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন তার নির্বাচনী টিমের কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে টেক্সাসের কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট-৩১ থেকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডোনা ইমাম পিছিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৮২% এলাকার ভোট গণনায় রিপাবলিকান প্রার্থী জন কার্টার পেয়েছেন ২ লাখ ৯ হাজার ৩৫২ ভোট। অপরদিকে ডোনা ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৭২ হাজার ৭২৯টি। এলাকাটি হচ্ছে রিপাবলিকানদের। তৃণমূলের সংগঠক হিসেবে এই প্রথম রিপাবলিকান প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে মাঠে নামেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ডোনা।
পুুনরায় বিজয়ী সিনেটর শেখ রহমান :
দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য জর্জিয়া স্টেট সিনেটর হিসেবে বিজয়ী (ডিস্ট্রিক্ট-৫) হলেন বাংলাদেশি আমেরিকান শেখ রহমান।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের কোনো প্রার্থী না থাকলেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতার জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে জর্জিয়া নির্বাচন বোর্ড।
কিশোরগঞ্জের সন্তান শেখ রহমান সব প্রবাসীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা এবং মাতৃভূমি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।
শেখ রহমান বলেন, ‘সবার আশীর্বাদে বহুজাতিক একটি সমাজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার মধ্যে অন্য রকম আনন্দ রয়েছে, যা আমাকে সামনে এগোতে আরও সহায়তা করবে।’
শেখ রহমান বলেন, ‘স্টেট পার্লামেন্টে থাকলেও জাতীয়ভিত্তিক যে কানেকশন রয়েছে ইউএস সিনেট ও ক্যাপিটল হিলে, তাকে অবশ্যই বাংলাদেশি আমেরিকান ও বাংলাদেশের সামগ্রিক কল্যাণে কাজে লাগানোর প্রয়াস অব্যাহত রাখব।’
উল্লেখ্য, তার নির্বাচনী এলাকার ভোটারের সংখ্যা ১৪ হাজার ৯০৪। এর মধ্যে মাত্র শ’ খানেক বাংলাদেশি আমেরিকান রয়েছেন। অর্থাৎ ভিন্ন ভাষা, বর্ণ আর ধর্মের মানুষের প্রিয় একজনে পরিণত হওয়ায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছেন তিনি। কমিউনিটির ব্যাপারে শেখ রহমানের পরামর্শ হচ্ছে- বাঙালিত্ব হৃদয়ে ধারণ করে প্রতিবেশী সব ভাষা-বর্ণ-ধর্মের মানুষের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাহলেই যে কোনো নির্বাচনে বিজয়ের পথ সুগম হয়।
চতুর্থ মেয়াদের জন্য জয়ী আবুল খান :
সর্বোচ্চ ভোটে নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে চতুর্থ মেয়াদের জন্য বিজয়ী হলেন বাংলাদেশি আমেরিকান আবুল বি খান। মঙ্গলবার রাতে বোর্ড অব ইলেকশন এ সংবাদ দিয়েছে।
শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত সিব্রুক ও হ্যামটন হিলস নিয়ে গঠিত ‘রকিংহাম-২০’ নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশি দূরের কথা, সাউথ এশিয়ানেরও অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। তেমনি একটি এলাকায় রিপাবলিকান হিসেবে সবার সঙ্গে মধুর সম্পর্ক রচনার মধ্য দিয়ে ছয় প্রার্থীর নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আবুল খান।
জয়ী হওয়ায় ভোটারদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পিরোজপুরের সন্তান আবুল খান বলেন, ‘দলীয়ভাবে বিজয়ী হলেও আমি এলাকার প্রতিটি মানুষের কল্যাণে আগের মতোই নিয়োজিত থাকব। একই সঙ্গে সুযোগ পেলেই সক্রিয় থাকব প্রবাসী বাংলাদেশিদের এবং প্রিয় মাতৃভূমির কল্যাণে।’
আবুল খান বলেন, এবারের নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। সেই আলোকেই ভোটাররা ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন। আবুল খান তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বললেন, ‘আমি অভিভূত এবং নিজেকে গৌরবান্বিত বোধ করছি। কারণ এটি হচ্ছে আমার ডিস্ট্রিক্ট। আগের মতো সামনের দিনগুলোতেও দায়িত্ব পালনে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করব না।’
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)