শার্শায় ওয়ার্কসপের আড়ালে কবিরাজির নামে প্রতারণা
যশোরের শার্শায় ওয়ার্কসপের আড়ালে কবিরাজি করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদর বাজারের টিএন্ডটি মোড়ের দক্ষিণ পাশে (যশোর-বেনাপোল) রাস্তার পাশে অবস্থিত আজিজুর রহমান এর মেসার্স আসিফ ওয়ার্কসপের আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছেন এক অভিনব কায়দায় কবিরাজির ব্যবসা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিনজন নারী ও একটি শিশু কবিরাজি চিকিৎসা নিতে এসেছেন তার প্রতিষ্ঠানে। এসময় রুগী প্রতি দুই শত টাকা নিতে দেখা গেছেও মোঃ আজিজুর রহমানের তা অস্বীকার করে এক শত টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। এছাড়াও প্রায় সময় দেখা যায় ওয়ার্কসপে একটি সার্টার (দরজা) বন্ধ, ওয়ার্কসপের ভিতরে মহিলাদের ভিড় সমাগম।
গোপন সুত্রে জানা গেছে, তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত রুগীদের জ্বীন-ভূতের চিকিৎসা ও ঝাড়ফুঁক সহ তাবিজ-কাবিজ, পানি পড়ার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকে। এলাকাবাসী সহ ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে কোন উপকারই হয়নি বরং টাকাগুলোয় পানিতে গেছে। আরো জানা গেছে, তার এই কাজের সহযোগী হিসাবে কিছু দালাল প্রকৃতির মহিলা ও পুরুষ আছে। তারাই মুলত বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গিয়ে কানপড়া (প্রবাহিত)’র মাধ্যমে এখানে ভালো চিকিৎসা হয় এমন ধরণের বিভিন্ন ভুলভাল বুঝিয়ে রোগিদের নিয়ে আসে, তারপর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেই। আর এভাবেই অভিনব প্রতারণা ব্যবসা করে তিনি হয়েছেন কোটি টাকার সম্পদের মালিক।
উল্লেখ্যঃ কে এই আজিজুর? তার অতীত জীবন বর্ণনা এলাকাবাসী জানান, সে এক সময় শার্শা জোনাল পল্লী বিদ্যুত অফিসের অফিসারসহ কর্মচারীদের যোগসাজশে মোটা অঙ্কের টাকা মাধ্যমে করতেন বিদ্যুত গ্রাহকদের মিটার দেওয়ার দালালী ব্যবসা। এর পাশাপাশি টুকটাক গ্রামে গ্রামে গিয়ে করতেন তেল মালিশ, ঝাড়ফুঁক এর কবিরাজি। এরপর সরকার পরিবর্তন হলে তার দালালী ব্যবসা করা আর সম্ভব হচ্ছিল না, তখন সে কৌশল পরিবর্তন অবলম্বন করে ওয়ার্কশপের দোকান দেন। আর এখানেই বসে হয়ে গেলো আরো বড় ধোঁকাবাজি প্রতারণার নয়া ধান্দার সুযোগ। এখানেই গ্রামের নিরীহ মানুষদের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নারী জানান, তার নাতি ছেলের জন্য আজিজুর রহমানের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছিলো কিন্তু কোন কাজ হয়নি। পরে তিনি অন্য জায়গা থেকে চিকিৎসা নিয়ে রোগ ভালো করেছেন।
এদিকে এলাকার সচেতন মহল ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের নিকট উক্ত প্রতারকের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে শান্তি দাবি জানিয়েছেন। এতসব অভিযোগের ভিত্তিতে একটি পত্রিকার অফিস স্টাফ পরিচয়ে আজিজুর রহমানের কাছে অভিযোগ বিবরণী বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি শিকার করে জানান, যে হ্যা আমি কবিরাজি করি এবং আমি কুকুরের কামড়, বিড়ালের আচড় কামড়, ভয়ভীতির ঝাড়ফুক চিকিৎসা দিয়ে থাকি, পুলিশ-দারোগার বউয়েরাও সহ তাদের পরিবারের সন্তান নিয়ে এসেও আমার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা (কর্মকর্তা) আবু ইউসুফ জানান, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম, খুব দ্রুত উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন। উপজেলা টিএসও অফিসারের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)