আশাশুনিতে বহু বিবাহের হোতা স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় গৃহবধু!


আশাশুনিতে বহু বিবাহে আসক্ত স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে আদালতে মামলা করেও সম্ভ্রমহারা হয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে ৩ সন্তানের জননী স্ত্রী রেকসোনা বেগম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক রিপোর্টে অসামাজ্য ভাষা ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গৃহবধু রেকসোনা বেগম উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের আব্দুল গফফার গাজীর একমাত্র কন্যা অসহায় রেখসোনা বেগমের ২০০৭ সালে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী বাইনতলা গ্রামের তফিল উদ্দিন সানার পুত্র হাফিজুলের সাথে। বিয়ের সময় লক্ষ টাকা মূল্যের জিনিষপত্র আদায় করে নেয় ও লক্ষ টাকার যৌতুক দিতে হবে বলে ওয়াদা করিয়ে নেওয়া হয়। যৌতুকের দাবীতে অত্যাচার নির্যাতনের মধ্যেও রেকসোনা স্বামী সংসার করে আসছিল। তাদের ওরসে ৩টি সন্তান রয়েছে।
তার পিতা মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করে চাপের মুখে যৌতুক দিতে থাকেন। কিন্তু তাদের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় স্ত্রীর উপর অত্যাচার চলতে থাকে। এমনকি সন্তানদেরকেও খরচ বন্ধ করে দেয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর স্বামীসহ অন্যরা স্বাক্ষীদের সম্মুখে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে বেদম মারপিট করে গুরুতর জখমী অবস্থায় একবস্ত্রে ৩ সন্তানসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এব্যাপারে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে ৪১৩/২০ নং মামলা দায়ের করেন। এমনকি স্বামীর অন্যান্য ভাই ও বোন-ভগ্নিপতিদেও প্ররোচনায় রেখসোনার বন্দকী জমির ধান কাটা, হাস-মুরগী, গরু ও ছাগল বিক্রি করে ভাই ও ভগ্নিপতিদের হাতে তুলে দেয়ায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন গৃহবধু রেখসোনা।
তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে আশাশুনি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম তদন্ত শেষে গৃহবধু রেখসোনা কর্তৃক আনীত অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে সত্য বলে প্রতীয়মান হয় মর্মে প্রতিবেদন প্রদান করেছেন। রেখসোনা অভিযোগ করেন, তদন্ত কর্মকর্তা তার কাছে অর্থ দাবী করেছিল, দিতে অস্বীকার করায় অন্যত্র রাত্রি যাপন করাসহ অশ্লিল ভাষায় লেখায় আসামী তার স্বামী তাকে তালাক দিয়ে আরেকটি বিবাহ করার পায়তারা চালানোর অভিযোগ করেছেন রেখসোনা। এমন কথা লিখে তার চরিত্রে কালিমা লেপন করা হয়েছে। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদন আসামীর কাছে হস্তান্তর করায় আসামী তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য দিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করিয়ে সমাজে তাকে চরম ভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। স্বামী পরিত্যাক্তা অসহায় মাতার সংসারে ৩ সন্তান নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে রেখসোনা বেগম। তদন্ত কর্মকর্তার কর্তৃক মানহানীকরসহ আত্মহত্যার প্রবনতা সৃষ্টি করার অভিমত প্রকাশের ব্যাপারে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এব্যাপারে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তদন্তের ব্যাপারে বাদী প্রয়োজনে নারাজি দিতে পারেন। অর্থ দাবীর কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতে সেটি প্রমান করুক। আমি যেটা শুনেছি সেটাই প্রতিবেদন দিয়েছি। ভূক্তভোগী গৃহবধু রেখসোনা সন্তানদের নিয়ে যাতে আবারও স্বামীর সংসার করতে পারে ও সঠিক বিচার পায় সে জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র পত্রদূত

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
